প্রথিতযশা সাংবাদিক ফখরে আলম আর নেইঃ নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া কিলাবের গভীর শোক প্রকাশ
নড়াইল প্রতিবেদকঃ
যশোরের প্রথিতযশা সাংবাদিক ফখরে আলম আর নেইঃ নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া কিলাবের গভীর শোক প্রকাশ করেছেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া কিলাবের সভাপতি উজ্জ্বল রার, সাধারণ সম্পাদক হিমেল মোল্লা, বুলু দাস, সহ কিলাবের সকল সদ।
দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার যশোরে দায়িত্বরত বিশেষ
প্রতিনিধি প্রথিতযশা সাংবাদিক ফখরে আলম (৬০) মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি
ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের যশোরে দায়িত্বরত নিজস্ব প্রতিবেদক সাইফুল ইসলাম
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন স্থানে
চিকিৎসা নেন।
মৃত্যুকালে তিনি বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, এক ছেলে একমেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে ফখরে আলম
অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সকাল
সাড়ে ৯টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।মৃত্যুর খবর পেয়ে
আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, সহকর্মীরা হাসপাতালে ও বাসভবনে ছুটে যান।
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন জানান,আজ বিকেল সাড়ে চারটায়
প্রেসক্লাব যশোরে আনা হয় ফখরে আলমের মরদেহ। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন
সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বৃহস্পতিবার বাদ আছর যশোর জিলা স্কুল মাঠে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত
হয়।জানাযা শেষে তাকে চাঁচড়ার পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফখরে আলম দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে
দায়িত্বরত ছিলেন। এর আগে তিনি ১৯৮৫ সালে সাপ্তাহিক রোববারের মাধ্যমে
সাংবাদিকতা শুরু করেন।পরে তিনি মানবজমিন, আজকের কাগজ, আমাদের সময়,
যায়যায়দিন, ভোরের কাগজ, বাংলাবাজার পত্রিকায় কাজ করেছেন।
সাংবাদিকতা জীবনে তিনি মোনাজাত উদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার, মুক্তিযুদ্ধ
জাদুঘরের বজলুর রহমান স্মৃতি পদক, এফপিএবি পুরস্কার, মধুসূদন একাডেমি
পুরস্কার, এফইজেবি পুরস্কার, টিআইবি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কারসহ
নানা পদক, পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।কবি হিসেবেও তার ব্যাপক পরিচিতি
ছিল। একসময় যশোর সাহিত্য পরিষদেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত
ছিলেন নানা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে।
কবিতা, সাংবাদিকতা, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি বিষয়ে ফখরে আলম ৩৪টি বই লিখেছেন।
তার মধ্যে ‘রিপোর্টারের ডায়েরি, হাতের মুঠোয় সাংবাদিকতা, ডাকে প্রেম
তুষার চুম্বন, ‘যশোরের গণহত্যা, ‘তুই কনেরে পাতাসী, ‘খুলে ফেলি নক্ষত্রের
ছিwপ, ‘এ আমায় কনে নিয়ে আলি, ‘অন্ধকার চুর্ণ করি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
ফখরে আলম ১৯৬১ সালের ২১ জুন যশোরের চাঁচড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা
মরহুম শামসুল হুদা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা।
শোক ও কর্মসূচি :প্রেসক্লাব যশোরের সিনিয়র সদস্য ফখরে আলমের মৃত্যুতে
গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসক্লাব যশোরের কর্মকর্তা ও সদস্যগন। এক
বিবৃতিতে প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সম্পাদক আহসান কবীর
শোকসন্তপ্ত পরিবার-সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আনোয়ার হোসেন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি
সাজেদ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মিলন রহমান, ফটো জার্নালিস্ট
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুনির ও সাধারণ সম্পাদক গালিব হাসান
পিল্টু।
ফখরে আলমের মৃত্যুতে প্রেসক্লাব যশোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির
মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ, প্রেসক্লাব ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন এবং
দোয়া মাহফিল। মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করে আগামী ১৭ মে রোববার বেলা১২টায় প্রেসক্লাবে দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।#