কদরের রাত্রিতে পেয়ারা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম কেবলমাত্র কুরআন শরীফ প্রাপ্ত হননি, বরং তিনি স্বয়ং কুরআনে পরিণত হয়েছেন। তাঁর কলব মুবারক, রুহ মুবারক উভয়েই “পবিত্র আত্মা” ও “কুরআনের” রঙে রঙিন হয়েছে। যার ফলস্বরূপ কদরের রাত্রিতে তার স্বত্ত্বা পরবর্তী ২৩ বছরের জন্য “জীবন্ত কুরআনে” রূপান্তরিত হয়েছিল। তিনি তাঁর কুরআনীয় বৈশিষ্ট ধাপে ধাপে ওহীর সুরতে ব্যক্ত করেন। প্রেরিত কুরআন যার প্রথমাংশটি, “পড়, তোমার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন” ছিল ওহী নাযিলের শুধুমাত্র একটি আধ্যাত্মিক আনুষ্ঠানিকতা। নবীজির ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত কুরআন কোন নির্দিষ্ট “কিতাব” ছিলনা। নবীজির জীবদ্দশায় স্বয়ং তিনিই ছিলেন “আল্লাহর জীবন্ত কিতাব”।
নবীজি ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের মাঝে ভারী দুটি জিনিষ রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি উভয়টিকে আঁকড়ে ধরো, তবে আমার পরে কখনোও বিপথগামী হবেনা, একটি হলো আল্লাহর কিতাব, অপরটি আমার আহলে বাইত, হাউজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত হবার পূর্বে এ দুটি পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হবেনা। “
“আলী কুরআনের সাথে, কুরআন আলীর সাথে, হাউজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত হবার পূর্বে তারা পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হবেনা।”
এই হাদিসগুলোর অর্থ এই নয়, যে ইমাম আলী এবং আহলে বাইত সদা সর্বদা কুরআনের একটি কপি নিজেদের সাথে রাখতেন। বরং, ইমাম আলী ও অন্যান্য আহলে বাইত কুরআনকে সর্বদা হৃদয়মাঝে ধারণ করে রাখতেন, লালন করতেন, কেনণা নবীজির স্বত্ত্বা্ তাদেরকে সর্বদা এ বিষয়ে উৎসাহিত করে রাখতেন।
অতএব, যিনি ইমাম তিনি “জীবন্ত কুরআন”, যদিও তথায় লিখিত কুরআনের উপস্থিতি থাক বা না থাক।
এখানেই শাম্স তাবরিযি বলেছেন, “আল্লাহর কিতাব” দ্বারা উদ্দেশ্য লিখিত কিতাব নয়, বরঞ্চ “আল্লাহর কিতাব” একটি ব্যক্তি বা স্বত্তা যিনি পথ প্রদর্শক, তিনিই কুরআন, তিনিই সুরা, তিনিই আয়াত।