দেবীদ্বারে ভাঙ্গা ব্রীজ কেড়ে নিল ট্রাক্টর চালকের প্রাণ

Spread the love


আবদুল্লাহ আল মামুন,দেবীদ্ধার প্রতিবেদকঃ দেবীদ্বারে একটি বালু বহনকারী ট্রাক্টর নিয়ে ব্যস্ততম সড়কের ভাঙ্গা ব্রীজ পারাপারের সময় ব্রীজ ভেঙ্গে রাসেল(২৮) নামে এক ট্রাক্টর চালকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ও সফিকুল ইসলাম(৩৫) নামে অপর ট্রাক্টরের হেলপার মারাত্মক আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।ঘটনাটি ঘটে রোববার সকাল অনুমান সোয়া ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে। উপজেলার গুনাইঘর (উত্তর) ইউনিয়নের গুনাইঘর গ্রামের ‘গুনাইঘর- বাকসার’ সড়কের ‘চান্দের বাড়ি ও আফসার বাড়ির’ মধ্যবর্তী স্থানে, পূর্ব থেকেই দেবে যাওয়া একটি ব্রীজ ভেঙ্গে দূর্ঘটনায় ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহত ট্রাক্টর চালক দেবীদ্বার পৌর এলাকার দেবীদ্বার গ্রামের উত্তর পাড়ার শহীদ মিয়ার ছেলে এবং আহত ট্রাক্টর হেলপার সফিকুল ইসলাম পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের পশ্চিম পাড়ার সুলতান মিয়ার পুত্র। বালু বহনকারী ‘সাত্তার এ্যান্টার প্রাইজ’ নামের ট্রাক্টরটির মালিক হলেন বানিয়া পাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিয়ার পুত্র সুমন মিয়া। ঘটনার দিন পৌর এলাকার বালিবাড়ি থেকে বালু বহন করে ট্রাক্টরটি উপজেলার বাঙ্গরা গ্রামে যাওয়ার পথে ওই দূর্ঘটনা ঘটে।সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) নাজমুল হাসান কয়েকজন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এস,আই নাজমুল হাসান জানান, মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনায় ট্রাক্টরটি যেভাবে পড়ে আছে এবং নিহত চালক তার সিটে বসা অবস্থায় ষ্ট্যায়ারিং ধরে বসে থাকা অবস্থায় ট্রাক্টরের বডির চাপায় আটকে আছে, সে অবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করতে ক্রেন লাগবে, এব্যাপারে ওসি মহোদয় ক্রেন’র ব্যবস্থা করছেন। এরই মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টায় মুরাদনগর থেকে একটি ফায়ার সার্ভিস টিম একটি গাড়ি ও একটি এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। ফায়ার সার্ভিস টিম প্রধান জানান, আমাদেরকে আগুনে মানুষ মারা যাওয়ার ভুল ইনফর্মেশন দেয়া হয়েছে। এ লাশ উদ্ধারে ক্রেন’র বিকল্প নেই। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, সড়কটি গুনাইঘর বাজারের পশ্চিম পাশর্^ দিয়ে বাকসার সহ নিজ উপজেলা বিভিন্ন এলাকা এমনকি পাশ^বর্তী চান্দিনা, মুরাদনগর ও দাউদকান্দির সাথে যোগাযোগের এটি অন্যতম একটি ব্যাস্ততম সড়ক। প্রতিদিন শত শত মানুষ ছোট-বড় মানবাহন চলাচল করে এই সড়কে। প্রায় দেড় থেকে দু’মাস পূর্ব থেকেই ব্রীজটির মাঝের অংশ দেবে যায়। স্থানীয়রা ব্রীজের দু’পাশে বাঁশ দিয়ে লক ডাউন করে রাখেন। তার পরও পায়ে হাটা মানুষ ও কিছু রিক্সা, সিএনজি ঝুঁিক নিয়ে চলাচল করে আসছিল। গুনাইঘর গ্রামের কামরুজ্জামান সূর্য্য জানান, প্রায় দেড় দু’মাস পূর্বে এ ব্যাস্ততম সড়কের ব্রীজটি দেবে যায়। আমরা ব্রীজের দু’পাশে বাঁশ দিয়ে লক ডাউন করে রাখি। তার পরও পথচারীরা এবং রিক্সা ও সিএনজি ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজটি পারপার হয়ে আসছে। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ব্রীজের এ নড়বড়ে অবস্থা দেখে বিকল্প সড়কে না যেয়ে ট্রাক্টর চালক পারাপারের চেষ্টা করতে যেয়েই এই দূর্ঘটনার শিকার হয়।গুনাইঘর গ্রামের মৃত; রোছমত আলরি পুত্র স্থানীয় কৃষক মানিক হোসেন(৩০) জানান, আমি একটি বিকট শব্দ শোনে দৌড়ে এসে এ অবস্থা দেখি। হেলপারটা পানিতে পড়ে কাতরাচ্ছে, উঠতে পারছেনা। এসময় আরো কিছু লোকজন এসে হাজির হয়েছেন। তাদের সহযোগীতায় তাকে পানি থেকে উদ্ধার করি। এসময় একটি রিক্সাযোগে একজন ডেলিভারীর রোগি যাচ্ছিল, আমাদের এ অবস্থা দেখে ওই মহিলা রিক্সাটা আমাদের জন্য ছেড়েদেন।তাকে দ্রæত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেই।বিকেল পৌনে ৩টায় একটি ক্রেন এসে প্রায় ৪৫মিনিট অভিযানে চালিয়ে লাশ ও ট্রাক্টরটি উদ্ধার করেছেন। বিকেল পৌনে ৪টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত লাশ থানায় নিয়ে আসার সংবাদ পেয়েছি। তবে পুলিশ জানিয়েছেন নিহতের পরিবার শোকার্ত থাকায় এখনো মামলা প্রক্রিয়ার বিষয়টিও অনিশ্চিত রয়েছে। যা পরবর্তীতে জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *