সোনারগাঁয়ে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ।আহত-১০জন। পুলিশ ১৯ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ।
স্টাফ রিপোর্টার:
সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় ধাওয়া পাল্টাধাওয়া। ককটেল বিস্ফোরণ। বিচার দাবীতে বিক্ষোভ। আহত-১০জন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৯ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ।
মামলা সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদি ইউনিয়নের শান্তিরবাজার, চেঙ্গাকান্দী এলাকায় হাবিবুর রহমান হাবু ও তার ক্যাডার বাহিনীর চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় উজ্জল ও শাকিল নামের দুই যুবককে কুপিয়ে আহত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদে ওই এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সোমবার (৮ জুন) সকালে ওই এলাকার ৫ গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে হাবিবুর রহমান হাবুর বিচার দাবী করে বিক্ষোভ করে। এ ঘটনায় হাবিবুর রহমান হাবুর লোকজন উত্তেজিত হয়ে ধাওয়া করে গ্রামবাসীকে। এক পর্যায়ে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ঘটনার সময় হাবিবুর রহমান হাবুর লোকজন পর পর ৬টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় কেউ আহত না হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.সাইদুল ইসলাম ও সোনারগাঁও থানার ওসি মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে হাবিবুর রহমান হাবুর বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর পক্ষে দুপুরে আহত যুবকদের চাচা ইসহাক মিয়া বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার বারদি ইউনিয়নের শান্তিরবাজার, চেঙ্গাকান্দী এলাকায় ডাকাত সর্দার ও বারদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হকের সমর্থিত হাবিবুর রহমান হাবু ও তার ক্যাডার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। করোনার প্রার্দুভাবের মধ্যেও গত ১৫ দিনে এ বাহিনীর সশস্ত্র ক্যাডাররা নিরীহ ৬ ব্যক্তিসহ কমপক্ষে ১০ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে। ভাংচুর ও লুটপাট করেছে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। গত ২৮ মে চাঁদার দাবীতে শান্তিরবাজারে নজরুল ইসলামের দোকান ভাংচুর করে হাবিবুর রহমান হাবু ও তার লোকজন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেঙ্গাকান্দি গ্রামের লোকজন হাবুকে একা পেয়ে মারধর করে। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গত রোববার সন্ধ্যায় হাবুর নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র দা, রাম দা, টেঁটা ও লোহার রড নিয়ে শান্তিরবাজার মোড়ে চাঁদাবাজিতে বাঁধা দেওয়া যুবক শাকিল ও উজ্জলকে পেয়ে কুপিয়ে আহত করে। আহত অবস্থায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে গ্রামবাসী হাবু ও তার লোকজনের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুনরায় হাবিবুর রহমান হাবুর নেতৃত্বে গ্রামবাসীর সাথে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৯ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডাকাত সর্দার হাবু ও তার ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এমনি কি হামলা ও নির্যাতনের শিকার ভূক্তভোগী কেউ মামলা করতেও সাহস পায় না। হাবুর বিরুদ্ধে , ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরিসহ ৮টি মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান হাবু বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে একা পেয়ে গত মাসে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার লোকজন তাদের মারধর করেছে। সোনারগাঁও থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৯ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বসে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।