মুরাদনগরে লঞ্চঘাট ও নদী দখল করে যুবদল নেতার ভবন নির্মাণ
মোঃ হাবিবুর রহমানঃ ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুরে তিতাস নদী ও লঞ্চঘাটের একাংশ দখল করে ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি জসিম উদ্দিন রিপনের বিরুদ্ধে ভবন নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো বাজার লকডাউনে থাকলেও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাত্র ৩’শ গজের মধ্যে ঐ ভবন নির্মাণাধীন। বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানোর পরেও কাজ বন্ধ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজের বিষয়টি সবার মুখে মুখে। এতে স্থানীয় ভূক্তভোগিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন রিপন (৩৯) রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের সাহাবুদ্দিনের ছেলে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুরের তিতাস নদী ও লঞ্চঘাটের একাংশ দখল করে ভবন নির্মানের কাজ করছেন রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন রিপন। বহুতল ভবনের ৩শ’ গজ দুরেই রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়ন ভূমি অফিস। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা লঞ্চের মাধ্যমে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে মালামাল আনা নেওয়া করি। তিতাস নদীর লঞ্চ ঘাটের একাংশ দখল করে যুবদল নেতা যে ভবন নির্মাণ করছেন তাতে লঞ্চ থেকে মালামাল উঠানামা করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। লকডাউনের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর লঞ্চঘাটটি আবার ব্যস্ততম হয়ে উঠবে। নির্মানাধীন ভবনের কারণে লঞ্চঘাটের ঐতিহ্যের উপর যেমন প্রভাব পড়বে, তেমনি ভোগান্তিতে পড়বে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীরা।
রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) হাবিবুর রহমানের নিকট ভবন নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জসিম উদ্দিন রিপন তার বাবা সাহাবুদ্দিনের নামে ২০০০ সালে বাজারের একটি দোকান ভিটি এক সনা মেয়াদে লিজ নেয়। তিনি ওই দোকানের পিছনে তিতাস নদী ও লঞ্চঘাটের একাংশ দখল করে যে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি নিজে একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য বারণ করেছি। কিন্তুু সে আমার নিষেধ অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে। পরে গত ১১ মার্চ (যার স্মারক নং ২৩) বিষয়টি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়কে লিখিত ভাবে অবহিত করেছি।
ইউপি’র সদস্য ও রামচন্দ্রপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী জীবন মিয়া বলেন, যুবদল নেতা রিপন এ সরকারের আমলে নদী ও লঞ্চঘাট দখল করে ফাউন্ডেশন দিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কার্যক্রম দেখে আমরা হতবাক হই। তাৎক্ষনিক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবকে জানালে তিনি বলে বিষয়টি আমি দেখতেছি। তিনি দেখতে দেখতে ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করে ফেলেছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন রিপন বলেন, বাখরাবাদ মৌজার ১০৩৫ দাগে আমার বাবা একটি দোকান ভিটি লীজ এনেছেন। সেই সুবাধে আমরা এই জায়গার মালিক। লীজ আনা জায়গাসহ লঞ্চঘাট ও নদী দখল করে ভবন নির্মাণ করাটা বৈধ? এমন প্রশ্নে কোন সদুত্তর না দিয়ে তিনি লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। করোনা কালের জন্য একটু সময় লাগছে। তবে খুব সহসাই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।