ইব্রাহিমপুর গ্রামে ফুফুর কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে ২ প্রবাসীকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম
আবুল কালাম আজাদঃ পাওনা টাকা চাইতে গেলে দুই প্রবাসীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকাল আনুমানিক ৪টায় ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উক্ত হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। হামলায় আহত সজিব মিয়া মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ধনপতিখোলা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে ও অপর আহত প্রবাসী আরিফ মুন্সী নবীপুর গ্রামের আলাউদ্দিন মুন্সীর ছেলে। তারা নবীনগর থানা মালাই বাঙ্গরা বাজারে একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত সজিব মিয়া বলেন, আমি সৌউদী আরব থাকাকালে আমার ফুফু নাছিমা বেগম তাদের পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নেয়। এ টাকা চাইলেই বিভিন্ন সময় দিন-তারিখ দিয়েও টাকা ফেরত দেয় নাই। পরে বিষয়টি পারিবারিক ভাবে জানালে ফুফু নাছিমা বেগম আমার বাবাকে বলেন তার মেয়ে আমার কাছে বিয়ে দিবেন। আমার বাবাও তার কথায় রাজি হন। এ ভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর আমার ফুফু বিয়ের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেন। শনিবার বিকেলে বিষয়টি রফাদফা করা জন্য আমি ও আমার আত্মীয়স্বজণরা ফুফুর বাড়ি যাই। পাকা ঘরের দরজা বাহির থেকে তালা দিয়ে দেয় পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার ফুফু নাছিমা বেগম, তার ছেলে রাব্বি, রাজন মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া, মজনু মিয়ার ছেলে শামীম ও তুহিন লোহার রড, কাঠের রোল দিয়ে পিটিয়ে আমাদের উপর অতর্তিতে হামলা চালায়। তাদের এ পূর্ব পরিকল্পিত হামলায় আমরা হতভম্ব হয়ে দিকবেদিক ছুটাছুটি করি। এ হামলায় অন্যান্যরা সামান্য জখম হলেও আমি ও আমার খালাতো ভাই আরিফ মুন্সী মারাত্বক ভাবে জখম হই। আমাদের শোর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে বিষয়টি জিনদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফকে জানায়। তখন ইউপি সদস্য নার্গিস আক্তার লোকজন নিয়ে এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। সজিব মিয়ার মামা নাছির উদ্দিন ভূইয়া বলেন, সৌউদী আরব থেকে আসার পর সজিব মিয়া প্রায়ই ফুফুর বাড়িতে বেড়াতো এবং ফুফাতো বোন লিজা আক্তারকে নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। করোনা ভাইরাস শেষে ফুফাতো বোন লিজা আক্তারের সাথে সজিব মিয়ার বিয়ে হবে বলে আশ্বস্ত করে তার ফুফু। বিষয়টির চুড়ান্ত ফয়সালা করার জন্য শনিবার ওই বাড়িতে গেলে তারা আমাদের উপর হামলা করে। হামলাকারীরা আমাদের সবার উপরই কম-বেশী আঘাত করেছে। তারা সজিবের বাবা বাচ্চু মিয়ার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও নিয়ে গেছে। সজিব মিয়ার বাবা বাচ্চু মিয়া বলেন, মেয়ে বিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে আমার ছেলের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নিয়ে এখন সে টাকা আত্মসাত করার পাঁয়তারা করছে। আমি এ অমানবিক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। সজিব মিয়ার নানা শ্রীকাইল গ্রামের আবুল খায়ের বলেন, আমার এ বয়সে এমন ঘটনা আর চোখে পড়েনি। আমরা এখন রোগি নিয়ে ঝামেলায় আছি। উক্ত ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার কাজ চলছে। জিনদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি ফুফু ও ভাইপোর মধ্যে। ফুফু তার লোকজন দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ভাইপোদের মারধর করেছে। তারা কাজটি চরম অন্যায় করেছে। যা নিন্দা জানাবার ভাষা আমার নেই। আমি শুনে তাদেরকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করি।