সরাইলে সরকারি অফিসে ২ মাসে ১৬ চুরি! আতঙ্কে কর্মকর্তারা

Spread the love

মাহবুব খান বাবুল,সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদকঃ হঠাৎ করে সরাইল উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিস ও কোয়াটারে বৃদ্ধি পেয়েছে রাতের  চুরি। অধিকাংশ অফিসের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করছে চুরেরা। নিয়ে যাচ্ছে সিলিংফ্যান, মটর ও কম্পিউটারসহ মূল্যমান জিনিষপত্র। গত দুই মাসে উপজেলা চত্বরের সরকারি অফিসে ১৬ টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘনঘন চুরির ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি এখানে। এখন রাত হলেই আতঙ্কে থাকেন কর্মকর্তারা। জেলা ও উপজেলার আইনশৃঙ্খলা সভায় এসব চুরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চুরির ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলাও করেছেন একাধিক কর্মকর্তা। সম্প্রতি উপজেলার ২/১ টি জায়গাকে মাদক সেবনের আখড়া বানিয়ে নিয়েছে মাদকাসক্তরা। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন সূত্র জানায়, গত দুই মাস ধরে সরাইল উপজেলা চত্বরের সরকারি অফিস সমূহে রাতের বেলা চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক দিনের মধ্যে সরকারি কোয়ার্টারের নলকূপ চুরি সহ ৬টি সরকারি দফতরে চুরি হয়েছে। উপজেলা খাদ্য অফিস ও হিসাবরক্ষণ অফিসে দুইবার চুরি হয়েছে। উভয় অফিসের কম্পিউটার গুলো নিয়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলা বিআরডিবি অফিস ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দফতরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে কম্পিউটার সহ মূল্যবান অনেক জিনিষ নিয়ে গেছে চুরেরা। এর আগে উপজেলা সংলগ্ন নিজ সরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালা ভেঙ্গে ১৪টি সিলিংফ্যান, সরাইল একাডেমির ২টি ফ্যান ও ২টি বৈদ্যুতিক বাল্ব, ইসলামি ফাউন্ডেশনের অফিস থেকে ৪টি সিলিংফ্যান ও উপজেলা বন কর্মকর্তার অফিস থেকে ১টি সিলিংফ্যান ও পানি ওঠানোর মটর চুরি হয়েছে। উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয়কারীর (ইউডিএফ) অফিস উদ্ধোধনের দিবাগত রাতেই দরজার তালা ভেঙ্গে ১টি ফ্যান ও ২টি বাল্ব নিয়ে যায়। উপজেলার কোয়াটারের ৩ (ক) নম্বর বাসার দরজা কেটে প্রবেশ করে চাল ডাল বালতিসহ বিভিন্ন জিনিষপত্র নিয়ে গেছে। উপজেলা প্রকৌশলীর গোডাউনের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে মূল্যবান জিনিষপত্র নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয় চুরেরা। অথচ ইউএনও অফিসের দুইজন সহ উপজেলার ৮ দফতরে সরকারি নিয়োগ প্রাপ্ত ১০ জন নাইট গার্ড রয়েছেন। এসব চুরির ঘটনায় হিসাব রক্ষণ অফিস ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দফতর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওদিকে অফিসার্স কোয়াটারের পেছনের একটি পরিত্যাক্ত পানির ট্যাংকিতে কতিপয় কিশোর ও যুবক দিনে রাতে নেশার আসর বসায়। সন্ধ্যার পর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দফতর, ত্রিতাল সঙ্গীত নিকেতনের আশপাশে ও সমবায় অফিস ভবনের বারান্দায় বসে গাঁজা সেবন করে এক শ্রেণির যুবক। এ ছাড়া বিকেল ৪টার পর থেকেই কতিপয় বখাটে বিভিন্ন দফতরের বারিন্দা ও আশপাশে বসে আড্ডা দিতে থাকে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আসলে উপজেলার অফিস পাড়াটি অরক্ষিত। আমরা নিয়মিত অফিসার দিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। অভিযান অব্যাহত আছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, প্রাক্তন ইউএনও স্যার বিষয়টি জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় বলেছেন। উপজেলা চত্বরে চুরের প্রবেশ ঠেকাতে প্রতিরক্ষা দেওয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। আর সমগ্র অফিস পাড়া ও কোয়াটার গুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *