৭ লক্ষ বাসিন্দা আতঙ্কে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধে ধস
মোহাম্মদ বিপ্লব সরকার, চাঁদপুর জেলা প্রতিবেদক : আকস্মিক ভাবে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধের ৫০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালের দিকে বাঁধটির জনতা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ বালুর বস্তা ফেলে সাময়িকভাবে ধসে পড়া স্থান মেরামত করে। উপজেলার জনতা বাজার এলাকার বাসিন্দা কাশেম বকাউল ও রাজ্জাক মীর বলেন, তাঁরা শনিবার সকালে বেড়িবাঁধ ধসে পড়ার খবর পান। সঙ্গে সঙ্গে এলাকার লোকজন নিয়ে সেখানে যান। দেখতে পান, বেড়িবাঁধটির দক্ষিণ-পূর্ব পাড়ের অন্তত ২০০ ফুট জায়গা মেঘনার দিকে ধসে পড়েছে। এ সময় বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে বলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। লোকজন কিছু বালু দিয়ে ধসে পড়া স্থান মেরামতের চেষ্টা করেন। বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে মুঠোফোনে জানানো হয়। পরে পাউবোর প্রকৌশলী ও লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন এবং কয়েক শ’ বালুর বস্তা ফেলে ধসে পড়া স্থানটি মেরামত করেন। ১৯৮৮ সালে সেচ প্রকল্পের ৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই মূল বেড়িবাঁধ নির্মিত হয়। নির্মাণের পর থেকে এ পর্যন্ত দুবার এটি ভেঙে যায়। লাখ লাখ টাকার ফসল ও ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়। সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধ ঘুরে দেখা গেছে, ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের জনতাবাজার এলাকায় ৫০ মিটারের বেশি এলাকা ধসে গেছে। সেখানে বিরাট গর্ত ও ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই ফাটল দিয়ে মেঘনার পানির প্রবেশ ঠেকাতে চাঁদপুর পাউবোর লোকজন অনেকগুলো বালুর বস্তা ফেলে আপাতত মেরামত করেছেন। সেখানে পানি ঢোকা বন্ধ রয়েছে। বাঁধটির ধসে পড়া স্থান দেখতে সেখানে ভিড় করছেন স্থানীয় লোকজন। মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প পানি ব্যবহারকারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সরকার মো. আলাউদ্দিন বলেন, ১৯৮৮ সালে সেচ প্রকল্পের ৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই মূল বেড়িবাঁধ নির্মিত হয়। নির্মাণের পর থেকে এ পর্যন্ত দুবার এটি ভেঙে যায়। লাখ লাখ টাকার ফসল ও ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়। তিনি অভিযোগ করেন, চাঁদপুর পাউবোর দায়িত্বহীনতা ও উদাসীনতার কারণে এবারও বাঁধটিতে বিরাট ধস নামে। আগে থেকে সতর্ক থাকলে এ ঘটনা ঘটত না। সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, মেঘনার পানির চাপে বেড়িবাঁধটির ৫০ মিটার এলাকা ধসে গেছে। ধস ও সম্ভাব্য ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ধসে পড়া স্থানে ২ হাজার ৫ হাজার বালুর জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এতে স্থানটি আপাতত ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে। পরে স্থায়ীভাবে স্থানটি মেরামত করা হবে। তিনি আরও বলেন, বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ধসে পড়ায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।