মুরাদনগরে ইউপি’র চেয়ারম্যানের ভূয়া প্রতিবেদনে সাংবাদিক কারাগারে
আজিজুর রহমান রনিঃ ইউপি’র চেয়ারম্যানের ভূয়া প্রতিবেদনে সাংবাদিক কারাগারে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউপি’র চেয়ারম্যান আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ ওঠেছে। ভূক্তভোগি জাকির হোসেন (৪৫) দৈনিক জনতার কুমিল্লা উত্তর জেলা প্রতিনিধি ও মুরাদনগর উপজেলার দারোরা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। জানা যায়, গত বছরের ২০ অক্টোবর ধামঘর গ্রামের সুরুজ মিয়া পারিবারিক দ্বন্দের জেরে তার বাবা আকমত আলীকে (৭৫) হাতুরি দিয়ে পেটান। এ দৃশ্য প্রতিবেশী একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। অপর দিকে ছেলে সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে বৃদ্ধ আকমত আলী থানায় মামলা করেন। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও মামলার কপি পেয়ে সাংবাদিক জাকির হোসেন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুরুজ মিয়া তার ৫ম স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগ এনে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ধামঘর ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেন। চেয়ারম্যান আবুল হাসেম সাংবাদিক জাকির হোসেনকে এ বিষয়ে কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে বিষয়টি এক প্রকার গোপন রেখে আদালতে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন এ মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ফলে বিজ্ঞ আদালত গত ১৮ জানুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে মুরাদনগর থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিক জাকির হোসেনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলার প্রথম স্বাক্ষী সুরুজ মিয়ার মা রফিয়া খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সাংবাদিক জাকির নিউজ করার কারণে আমার ছেলে সুরুজ মিয়া তার ৫ম বউকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে। বয়সের কারণে আমি চোখে তেমন দেখিনা, কানেও কম শুনি। অথচ আমি নাকি জাকিরের হাত থেকে তার বউকে রক্ষা করেছি। এ মিথ্যা কথা আল্লাহ সইব না। সুরুজ মিয়ার পিতা আকামত আলী বলেন, আমার ছেলে সুরুজ দুরন্তর লোক। আমাকে হাতুরি পিটার ঘটনায় নিউজ করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে সে। চেয়ারম্যান আবুল হাসেমকে ঘটনাটি জানালে তিনি বিচার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিচারতো করে নাই, উল্টো আমার ছেলের কাছ থেকে সুবিধা পেয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। মামলার বাদী সুবর্ণা আক্তার ও তার স্বামী সুরুজ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে তাদের মুঠোফোন যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। ধামঘর ইউপি’র চেয়ারম্যান আবু হাসেম বলেন, সুরুজ মিয়া আমার কাছে এসে বলেন, তার বউ সুবর্ণা আক্তারকে সাংবাদিক জাকির হোসেন ধর্ষনের চেষ্টা করলে তার মা রফিয়া খাতুন তাকে রক্ষা করেন। আপনি কি মামলার স্বাক্ষী রফিয়া খাতুন ও অভিযুক্ত জাকির হোসেনের সাথে কথা বলেছেন? এমন প্রশ্নে চেয়ারম্যান বলেন, লোক মারফত তাদের কাছে খবর পাঠিয়েছিলাম, তারা আসে নাই। পরে আমি রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। মুরাদনগর থানা কর্মকর্তা(ওসি) সাদেকুর রহমান বলেন, ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে সাংবাদিক জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে সোপর্দ করেছি।