আব্দুল্লাহপুরে গান-বাজনা নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ২

Spread the love

দেবিদ্বার প্রতিবেদকঃ আব্দুল্লাহপুরে একটি বিয়ে বাড়ির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নাচ ও গান বাজনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন যুবক। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর ইনসাফ মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে আবদুল্লাহপুরে। নিহতরা হচ্ছেন উপজেলার আব্দুল্লাহপুর (জীবনপুর) গ্রামের হাবিব মিয়ার পুত্র সাইফুল (২০) ও মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গুঞ্জুর গ্রামের রেনু মিয়ার পুত্র রাহীম মিয়া (২০)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেবিদ্বার উপজেলার আবদুল্লাহপুর গ্রামের ওমান প্রবাসী জাকির হোসেনের মেয়ে নাজমা আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার বুড়িরপাড় গ্রামের প্রবাসী হোসাইন মিয়ার ৮/৯ মাস আগে মোবাইল ফোনে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কয়েকদিন আগে হোসাইন মিয়া দেশে আসলে বৃহস্পতিবার বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রী হয়ে আসার কথা ছিলো। তাই বুধবার সন্ধ্যা থেকে মেয়ের বাড়িতে নাচ ও গান-বাজনার আয়োজন চলছিল। রাতে সেখানে নাচতে যায় পার্শ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জুর গ্রামের রাহিম, সজিব, মামুন ও আক্তার, সাইফুলসহ আরও কয়েকজন। এ নিয়ে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিয়ে বাড়ির পশ্চিমপাশে আবদুল্লাহপুর ইনসাফ মার্কেটের সামনে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে গুঞ্জুর গ্রাম থেকে আসা যুবকদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০/১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে রাহিম ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং  দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার পর সাইফুল ইসলাম মারা যায়। আহতদের মধ্যে সজিব, মামুন, আক্তার হোসেনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ভোর রাতে আশংকাজনক অবস্থায় সজিবকে  ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল (ঢামেক) এবং আক্তার  হোসেন ও মামুনকে রাজধানীর ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসকারা জানিয়েছেন তাদের অবস্থা আশংকাজনক। মেয়ের মা সেলিনা আক্তার জানান, রাতে আমাদের গ্রামের অনেক ছেলে ছাড়াও আশপাশের গ্রামের অনেক ছেলে আমাদের বাড়িতে আসে, আমরা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাদের মধ্যে কি নিয়ে ঘটনা ঘটেছে জানতে পারিনি। পরে লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি বাড়ির পাশে মার্কেটের সামনে মারামারি হয়েছে। নিহত সাইফুলের মা আউলিয়া বেগম জানান, সাইফুল বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করেছে। সে রাতে খেয়ে বাসা থেকে বিয়ে বাড়ির দিকে যায়। আমি বাড়িতে আসার জন্য ফোন করি। আমাকে বলে, পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে আসতেছি মা। এটাই ছিলো তার সঙ্গে আমার শেষ কথা। বৃহস্পতিবার সকালে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, খবর পেয়ে গভীর রাতে যখন ঘটনাস্থলে যাই তখন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিয়ে বাড়িতে নাচ-গান করতে এসে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে পাশ^বর্তী গ্রামের ছেলেদের কি অবস্থার প্রেক্ষিতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় মেয়ের বাবা জাকির হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *