সুগন্ধা ও বিষখালীর নদীর তীব্র ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে তীরবর্তী এলাকা

Spread the love

আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিবেদকঃ উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির স্রোত বাড়ার সাথে সাথে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ভাঙ্গন। মানচিত্র থেকে কয়েকটি ইউনিয়ন হারতে বসছে। কয়েক যুগ ধরে ভাঙ্গনের ফলে হাজার হাজার একর জমি নদীতে বিলিন হয়ে লক্ষাধিক মানুষ তাদের ভিটামাটি হারিয়ে নি:স্ব হয়েছে। কিছু পরিবার সরকারী খাস জমি বরাদ্ধ পেলেও সরকারী নিয়ম নীতির ধাপ অনুসরন করতে না পারায় নিজ দেশে যেন পরবাসি হয়ে আছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গ্রাম নদী ভাংঙ্গনে হারিয়ে গেছে। বিষখালী নদীর ভাঙ্গনে গত২৪ আগষ্ট’২১ মঙ্গলবার ঝালকাঠির পশ্চিম দেউরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারের অর্ধেকটা নদীতে হঠাৎ করে বিলীন হয়ে গেছে। এই নদী ভাঙ্গনের দৃশ্য ফেসবুকে লাইভ দেওয়ার সময় সাইক্লোন সেল্টার নদীতে ধ্বসে পরে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছে। ৭ দিনেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি। পেনাবালিয়া ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী অংশ অব্যহত ভাঙ্গনের মধ্যেও অবৈধ বালু উত্তোলন থেমে নেই। অভিযোগ রয়েছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করেই অসাধু ব্যবসায়ীরা নিয়ম বর্হিভুত বালু উত্তোলন করে আসছে। ভাংঙ্গন কুল থেকে মাটি কেটে ইট ভাটা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এদিকে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাংশ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের বাকী অংশসহ বাদুর তলা বাজারের সম্পূর্ন বিলীন হওয়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী। হুমকির মুখে রয়েছে বিষখালীর তীরবর্তী বড়ইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, বড়ইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাঠবড়ী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কয়েকটি বাজার, বেশকিছু বসতবাড়ী, মসজিদসহ অসংখ্য স্থাপনা ও ফসলি জমি। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ জানিয়েছেন নদী ভাঙ্গন থেকে জেলার বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ভাঙ্গনে পৈত্রিক ভিটা মাটি হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। ভাংঙ্গনে সব হারিয়ে কোনা সহায়তা না পেয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে থাকতে হচ্ছে অনেককে। সাম্প্রতিক ভাঙ্গনে পশ্চিম দেউরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারের অর্ধেকটা ভেঙ্গ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাংশ এবং একটি সমজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা, ফসলি জমি, বেশকিছু বসতবাড়ী, অসংখ্য গাছপালা, কয়েশ মিটার সড়ক নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গছে। যেকোন মুহুর্তে অবশিষ্ট অংশ আকস্মিক ভাংঙ্গনে হারিয়ে যাবে এমন আশংকায় স্থানীয়দের ঘুম হারাম হয়েছে। কখন নদীর করাল গ্রাসে হারিয়ে যায় জমি-জমার সথে তাদের স্বপ্ন। হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী বড়ইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, বড়ইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মঠবড়ী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মানকি সুন্দর সাইক্লোন সেল্টার, লঞ্চ টার্মিনাল, বাজার, সড়ক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তিন শতাধিক বসতবাড়ি, মসজিদ, কয়েকশ একর ফসলী জমি ও গাছপালাসহ বেশ কিছু স্থাপনা। করোন কারনে ছুটি থাকায় সমস্যা বোঝা না গেলেও ছুটি শেষে বিদ্যালগুলো দুটির কয়েকশ শিক্ষার্থীর পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়ে পরার আশংকা রয়েছে। দুর্যোগের সময় সাইক্লোন সেল্টারের পাশ্ববর্তী লোকজনকে আশ্রয় নেয়ার সুযোগও থাকছেনা। বিভিন্ন সময় পনি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করলেও প্রতিরোধের কোন কর্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষুব্দ প্রতিকৃয়া জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা । ঝালকাঠির পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) মো. রাকিব হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জেলায় মোট ১৫ কিলোমিটার নদী ভাঙ্গন প্রবন এলাকা রয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় ভাংঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু হয়েছে। ডিপিপি অনুমোধন সাপেক্ষে বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, নদী ভাংঙ্গন রোধে স্থায়ী বাধ দিতে হবে। অস্থায়ী বাধ দিয়ে ভাংঙ্গন রোধ করা যাবেনা। ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *