বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জয়
২০০৭ সালের পর অবশেষে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নেদারল্যান্ডসকে ৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কলিন অ্যাকার ম্যানের ৬২ রানের ইনিংসও রক্ষা করতে পারেনি কমলা বাহিনীকে।
ইনিংসে শুরুতেই নেদারল্যান্ডসকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারের প্রথম দুই বলেই জোড়া উইকেট নিয়ে সেখানেই ধসিয়ে দিয়েছেন ডাচদের ইনিংস। সেখান থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেনি কমলা বাহিনী। বরং চাপ থেকে বের হতে গিয়ে আরো চাপে পড়েছে, চতুর্থ ওভারে ফের জোড়া রান আউটের শিকার হয়েছে।
দলীয় ১৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় নেদারল্যান্ডস। বিক্রমজিৎ সিং ও বাস ডি লিডি ফিরেন কোনো রান না করেই। আর ম্যাক্স ও’ডাউড ৮ রান করে রান আউটের শিকার হলেও কোনো রান না করেই রান আউটের ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়েন টম কুপার।
ভুলে যাওয়ার মতো শুরুর পরও ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে নেদারল্যান্ডস। মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট হারালেও কলিন অ্যাকারম্যান ও স্কট এডওয়ার্ডের ৪৭ বলে ৪৪ রানের জুটিতে খানিকটা স্বস্তি ফিরে কমলা বাহিনীতে। তবে এবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ান সাকিব আল হাসান। ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডকে ফেরান ২৪ বলে ১৬ রানে। পরের ওভারে টিম প্রিংলেকে বোল্ড করে উল্লাসে মাতেন হাসান মাহমুদ। বিশ্বকাপের মঞ্চে এটিই তার প্রথম উইকেট।
পরের ওভারেই দ্বিতীয় শিকার পেয়ে যান হাসান মাহমুদে। লোগান ভেন বিককে ফেরান ৫ বলে মাত্র ২ রানে। তবে তখনো মাঠে কলিন অ্যাকারম্যান। স্রোতের বিপরীতে একা হাতে লড়াই করতে থাকেন তিনি। তবে তাসকিন আহমেদের চতুর্থ শিকারে পরিণত হয়ে ৪৮ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেন দলের ৯ম উইকেট হয়ে।
শেষ চেষ্টা করেন পল ভেন মিয়ারম্যান ও ফ্রেড ক্লাসেন। শেষ ৩ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৮ রান, ২ বলে ১২। তবে আর সেই সমীকরণ মেলাতে পারেনি এই জুটি। তবে তাদের ১৯ বলে ৩৪ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। শুরুটা আরেকটু ভালো হলে, খারাপ কিছুই ছিল বাংলাদেশের কপালে। শুরুতেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়া তাসকিন আহমেদ ২৫ রানে শিকার করেন ৪ উইকেট। মাত্র ১৫ রানে ২ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নেদারল্যান্ডসকে ১৪৫ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। ভালো শুরুই পেয়েছিল টাইগাররা। প্রথম ৫ ওভারেই বিনা উইকেটে সংগ্রহ ৪৩ রান। তবে দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে ফেললে ভালো শুরুটাও তখন চাপা পড়ে যায়। ১৪ রানে ফিরেন এই ওপেনার। আরেক ওপেনার নাজমুল হাসান শান্তও ফিরেন ২০ বলে ব্যক্তিগত ২৫ রানে।
অধিনায়ক সাকিব আর লিটনের ব্যাটে ভরসা মেলেনি। দুজনই ফিরেছেন ৩ বলের ব্যবধানে। লিটন করেন ১১ বলে ৯ রান, আর সীমানায় ক্যাচ দিয়ে সাকিব ফেরেন ৯ বলে ৭ রানে। খানিক বাদে ব্যক্তিগত ৩ রানে ইয়াসির রাব্বি বোল্ড হয়ে ফিরে গেলে ম্যাচটা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠে বাংলাদেশের জন্য।
ফিনিশিং দিতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। আফিফের সাথে ৪৬ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দিলেও সোহান করেন ১৮ বলে মাত্র ১৩ রান। প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরেছেন তাসকিনও। তবে আফিফের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে পথ খুঁজে পায় টাইগাররা। ত্রিদেশীয় সিরিজে রান খরায় ভোগার পরে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন এই তরুণ ব্যাটার।
একা হাতে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন আফিফ। ২৭ বলে ৩৮ করে ১৮তম ওভারের শেষ বলে ফিরেন আফিফ হোসেনও। তবে শেষ দিকে মোসাদ্দেক হোসেনের ১২ বলে অপরাজিত ২০ রানে ৮ উইকেটে ১৪৪ রানের সম্মানজনক সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।