হাসপাতালে কাতরাচ্ছে সাংবাদিক শরিফ মুরাদনগরে এখনো ১২ পরিবার বাড়িছাড়া, অভিযুক্তরা গ্রামে দিচ্ছে মহড়া

Spread the love

আবুল কালাম আজাদঃ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম চৌধুরী মূমুর্ষবস্থায় রাজধানী ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জামিন নিয়ে অভিযুক্তরা এলাকায় এসে গ্রæপে গ্রæপে দিচ্ছেন মহড়া। ফলে ১২ পরিবার এখনো গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আতংকে আছেন এলাকার নিরীহ মানুষ। সাংবাদিক শরিফের উপর হামলার আগে গত ৩০ জুন মঙ্গলবার দারোরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কুদ্দুস মিয়ার উপর এবং ২ জুন বৃহস্পতিবার সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবককে পিটিয়ে আহত করেছে শাহজাহান চেয়ারম্যানের লোকজন। হামলার ঘটনায় থানায় কুদ্দুস মিয়া মামলা করেন। সাইফুল থানায় অভিযোগ করলেও এখনো মামলা নেয়নি পুলিশ।  এরপর সাংবাদিক শরিফ ও তার পরিবারের উপর হামলায় গ্রেপ্তারের পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে এঅেভিযোগকারী পরিবারগুলোকে একের পর এক হুমকি ধমকি দিয়েই যাচ্ছে। ভয়ে আতঙ্কে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কুদ্দুস মিয়া, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান ও একই গ্রামের আরেক সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মাসুদসহ গ্রাম ছাড়া কাজিয়াতল গ্রামের দশ পরিবার। গত ৪ জুলাই দিনে দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া ও তার বাহিনীর সদস্যরা কাজিয়াতল গ্রামে সাংবাদিক শরিফের ঘরে ঢুকে টেনে হিছড়ে ওঠানে বের করে এনে কুপিয়ে, পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দেয়। তার কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শাজাহান চেয়ারম্যানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শরিফের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী।ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শাহজাহান চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার কররেও পরদিন রবিবার কুমিল্লার ভার্চুয়াল কোর্ট থেকে তিনি জামিন পান। এরপর গত মঙ্গলবার একই আদালতে আরো চারজন আসামি জামিন পায়। মামলার অপর দুই আসামি এখন কারাগারে রয়েছে। শরিফের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন চৌধুরী বলেন, আমার ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তারা আমার ডান হাতে কোপ দেন এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। তার মায়ের বাম হাত হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলে। শরিফের মাথায় কোপ দেয়া হয় এবং হাত-পা সব ভেঙে ফেলে। এখন আমার ছেলে পঙ্গু হওয়ার দশা। আর মামলার আসামিরা একে একে প্রায় সবাই জামিনে বেরিয়ে এলাকায় উল্লাস প্রকাশ করছে।দারোরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কুদ্দুস মিয়া বলেন, গত ৩০ জুন শাহজাহান চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেন। হাসপাতলে চিকিৎসা নিয়ে থানায় মামলা করি। পুলিশ রহস্যজনক কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেনি। সাংবাদিক শরিফের উপর হামলার ঘটনায় তার বাবার করা মামলায় চেয়ারম্যান শাহজাহান ও তার লোকজন গত মঙ্গলবার জামিন নিয়ে আসে কুমিল্লার আদালত থেকে। সাইফুল ইসলাম বলেন, এখন আমরা ১২ পরিবারের লোকজন গ্রাম ছাড়া। আমাদের অপরাধ শাহজাহান চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া। আর শরিফের অপরাধ তিনি দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছেন। এছাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান এবং একই গ্রামের সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মাসুদও গ্রাম ছাড়া।উক্ত ঘটনা গুলোতে অভিযুক্ত দারোরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেন, পক্ষে-বিপক্ষে যেহেতু লোকজন আছে, আমার বিরুদ্ধেতো অভিযোগ থাকবেই। মুরাদনগর সার্কেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাংবাদিক শরিফের উপর হামলার ঘটনায় চেয়ারম্যান শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে সোপর্দ করার পর বিজ্ঞ বিচারক জামিন দিলে আমাদের কিছু করার থাকে না। আসামিদের হুমকিতে ১২ পরিবার গ্রাম ছাড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *