ঠাকুরগাওয়ের বেওরঝাড়ি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি জেলে নিহত নিহতের ঘটনায় বিজিবি’র আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ লাশ ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর, দাফন সম্পন্ন
ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক: ঠাকুরগাওয়ের বেওরঝাড়ি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এটা হত্যাকান্ড বলে দাবি নিহতের পরিবারের। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এ অভিযোগ জানানো হয়। এদিকে নিহতের দুই দিন পর লাশ ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বাদ যোহর নিহত ঐ ব্যক্তি দাফন স্থানীয় পারিবারিক গোরস্থানে সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে ঐ সীমান্তে বাংলাদেশী নিহতের ঘটনায় বিজিবি বিএসএফ পতাকা বৈঠকে বিএসএফকে অনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঐ সীমান্তে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে এ প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল হক প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকালে নিহতের দুই দিন পর লাশ ময়না তদন্ত শেষে হিতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বাদ যোহর নিহত ঐ ব্যক্তি দাফন স্থানীয় পারিবারিক গোরস্থানে সম্পন্ন হয়েছে। নিহতের পরিবার, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃস্পতিবার সকালে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেওরঝাড়ি বিওপির মেইন পিলার ৩৮০-৮ এর কাছে স্থানীয় ৪-৫ জন জেলে সীমান্তবর্তী নাগর নদীতে মাছ ধরছিলেন। এ সময় তারা ভারতের ৫০ গজ অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে ১৭১ বিএসএফের বড়বিল্লাহ ক্যাম্পের টহলরত সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। অন্যরা পালিয়ে আসলেও শরিফুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। পরে বিজিবি ও বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ নিহত শরিফুলের মরদেহ উদ্ধার করে। শনিবার সকালে নিহতের দুই দিন পর লাশ ময়না তদন্ত শেষে হিতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বাদ যোহর নিহত ঐ ব্যক্তি দাফন স্থানীয় পারিবারিক গোরস্থানে সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে ঠাকুরগাওয়ের বেওরঝাড়ি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি জেলে কে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এ অভিযোগ জানানো হয়। নিহত সফিকুল ইসলাম খাটু এর ভাই শরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইকে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্রা করেছে বিএসএফ সদস্যরা। আমার ভাই তো আর ভারতে ঢুকে নাই। তাহলে কেন এই হত্যা? আমার ভাইয়ের মত আর কত ভাই সীমান্তে গুলি আর হত্যা হলে এ হত্যাকান্ড থামবে? আমরা বিজিবি আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। অন্যদিকে ঐ সীমান্তে বাংলাদেশী নিহতের ঘটনায় বিজিবি বিএসএফ পতাকা বৈঠকে বিএসএফকে অনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঐ সীমান্তে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে এ প্রতিবাদ জানায় বিজিবি।ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল শহীদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি বেউড়ঝাড়ী সীমান্তে ঘটেছে। মৃত্যুর পর আমরা খবর পাই। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবারেই বিজিবি’র পক্ষ থেকে বিএসএফ কে একটি প্রতিবাদ পত্র পাঠানো হয়। পরে এ ব্যাপারে ঐ সীমান্তে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। বিজিবি’র পক্ষ থেকে উক্ত কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের এ বৈঠকে বিএসএফ’র গুলি ছোড়া ও বাংলাদেশীকে হত্যার আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় । এসময় বিএসফকে আর সীমান্তে গুলি করে বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা না করার আহবান জানানো হয়। উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেওরঝাড়ি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে সফিকুল ইসলাম ওরফে খুটা মোহাম্মদ (৩০) নামে এক বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সফিকুল ইসলাম খাটু (৩০) উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের বেউড়ঝাড়ী ছোট চডুইগেদি গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে।