আমি লজ্জিত; আমি স্তব্ধ!

Spread the love

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে রাতে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে (২৩) বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল যুবক। মোবাইলে সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তারা। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার একটি গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের পর গৃহবধূ ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।

ঘটনার এক মাস পর রোববার দুপুরে নির্যাতনের ওই ভিডিও কেউ একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও তৎপর হয়ে ওঠে। পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বাদল এবং কর্মী রহিম, সুমনসহ পাঁচ-ছয়জন গৃহবধূর সঙ্গে এমন বর্বর আচরণ করেছে। পরে অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় আবদুর রহিম নামের একজনকে আটক করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর বিয়ে হয় বছর তিনেক আগে। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকে। দীর্ঘদিন স্বামীর কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার লোকজন নিয়ে রাত ১০টার দিকে গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে ‘পরপুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করেছে’ অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নির্যাতনকারী এক যুবক গৃহবধূর পরিধেয় বস্ত্র সম্পূর্ণ খুলে ফেলে। তিনি বিছানার চাদর ও তোশক দিয়ে নিজের দেহ আবৃত করে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এক যুবক তার গালে বারবার লাথি মারছে। আরেক যুবক তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে। আরেক যুবক গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করছে।

এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধিক্কার জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইদুর রহমান দিপু বলেন, মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার বাহিনী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কোনো সভ্য সমাজে এমনটা ঘটতে পারে না। আমি দেলোয়ার ও তার বাহিনীর লোকজনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার পর মেয়েটি তার কাছে এসেছিল। তবে কারা তাকে নির্যাতন করেছিল, সে সময় মেয়েটি তাকে কিছু বলতে পারেনি। ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূ ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে বসবাস করে না।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেখে পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযান চালায়। সন্ধ্যায় নির্যাতনকারী দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তার নাম আবদুর রহিম। সে জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শেখ আহমেদ দুলালের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, এ ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা যতই ক্ষমতাধর হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সূত্র : বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার অনলাইন ভার্সন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *