দেবীদ্বার দিনমজুরের প্রাণ গেল পুকুরের পাড়ভাঙ্গা মাটির চাপায়

Spread the love

এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ দেবীদ্বারে এক দিনমজুরের প্রাণ গেল পুকুরের পাড়ভাঙ্গা মাটির চাপায়। ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার ৪ নং সুবিল ইউনিয়নের পশ্চিম পোমকাড়া গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের পুকুরে। নিহত দিনমজুর সফিকুল ইসলাম(২৫) পশ্চিম পোমকাড়া গ্রামের মোঃ মোখলেসুর রহমানের পুত্র।

সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) মোঃ আরিফুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) মোঃ ছমি উদ্দিন, উপ-পরিদর্শক(এস,আই) আব্দুল বাতেন সহ একদল পুলিশ বেলা দেড়টায় ঘটনাস্থল থেকে নিহত দিনমজুরের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এসময় পুকুরের মালিক মৃত: মুন্নাফ মিয়ার পুত্র মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান(৪০)’কে ও থানায় নিয়ে আসেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পশ্চিম পোমকাড়া গ্রামের মৃত: মুন্নাফ মিয়ার পুত্র মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান(৪০) তার নিজ পুকুরের পাড় খনন করেন। ওই পুকুরের পাড় খনন করার সময় পাড়ের নিচের অংশে প্রায় ৬/৭ ফুট ভেতরের দিকে সুরঙ্গের ন্যায় কেটে ফেলেন। মাটিকাটা শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে পুকুড়ের পারের ভেতরের অংশের মাটি কাটতে অপারগতা জানালেও চাপের মুখে মাটি কাটছিলেন। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টায় বৃষ্টিতে ভেজা পুকুরের পাড়টির উপরে থাকা গাছ-গাছালির ভার সইতে না পেরে ধসেপড়ে, এসময় দিনমজুর সফিক ঘটনাস্থলেই মাটি চাপায় মারা যান। পরে স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে তাকে উদ্ধর করেন।

মোঃ ইদ্রিস মিয়া জানান, মাটিকাটার কাজে নিয়োজিত ছিলেন ৪ শ্রমিক, ওরা সবাই পশ্চিম পুমকাড়া গ্রামের প্রতিবেশী। ওরা হলেন, মান্নান মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন(৪২), আঃ সামাদের ছেলে সোহেল মিয়া(২৫), সামসুল হকের পুত্র রুবেল মিয়া(২২) ও মোঃ মোখলেসুর রহমানের পুত্র নিহত শ্রমিক সফিকুল ইসলাম(২৫)। মাটি কাটার দায়িত্বে ছিলেন সফিক ও দেলোয়ার এবং মাটি নেয়ার দায়িত্বে ছিলেন রুবেল ও সোহেল। এসময় পাড় ধ্বসে সফিকের উপর পড়ে।

ঘটনার পর বাকরুদ্ধ ছিলেন নিহতের মা’ জোৎস্না বেগম আর স্ত্রী বকুল আক্তার(২৩) চিৎকার করে কাঁদছিলেন আর বলছেন, আমার পুত্র রায়হান (৮ মাসের শিশুপুত্র) এতিম হয়ে গেল, আজ সকালে তারে কোলে নিয়া আদর করে গেল, এ আদর তোর কপালের শেষ আদর ছিল, …আমার কি হয়ে গেল।

প্রতিবেশী গোলাম রব্বানী জানান, প্রায় ৩/৪ বছর পূর্বে উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আব্দুল খালেক’র মেয়েকে বিয়ে করেছিল সফিক, রায়হান নামে তার একটি ৮মাস বয়সী পুত্র সন্তান আছে। সফিক বিয়ের পর পরিবারের দান্যতা ঘুঁচাতে দায়-দেনা করে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন, সর্বশান্ত হয়ে দেশে এসে এখন দিনমজুরের কাজ করছিলেন।

বিকেল সাড়ে ৩টায় এ রিপোর্ট লিখঅ পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছেন।

দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি তদন্ত) মোঃ ছমি উদ্দিন জানান, নিহতের মরদেহ এবং পুকুরের মালিককে থানায় নিয়ে এসেছি। ঘটনাটি তদন্তের পর এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে মামলা নেয়া হবে। নিহতের মরদেহ আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *