মুসলমান সেই, যার জিহ্বা আর হাত থেকে দুনিয়ার সবাই নিরাপদ
মুসলমান সেই, যার জিহ্বা আর হাত থেকে দুনিয়ার সবাই নিরাপদ মাওলানা শেখ মুহাম্মাদ নাজিম আদিল আল হাক্কানি আন-নকশবন্দী২০০৩,এখন পুরা দুনিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলছে। ইসলাম, সে তো নিজেই একটা সূর্যের মতন। কেউ কি সূর্যকে দোষী করতে পারে? মাঝেমাঝে তোমরা দেখবে, কুকুর, চাঁদের দিকে তাকিয়ে, সূর্যের দিকে তাকিয়ে ঘেউ ঘেউ করে। আর এখন, এই পৃথিবীতে কত মানুষ ঐ কুকুরের মত ইসলামের বিরুদ্ধে চিৎকার করছে। ইসলাম, সে তো বেহেস্তের বিধান। সব চাইতে নিখুঁত ধর্ম, সব চাইতে সত্য ধর্ম। ইসলাম, ইমান, ইহসান, ঠিক যেভাবে সাইয়িদিনা জিবরীল (আ) সেই বেদুইনের বেশে ধবধবে সাদা কাপড় পড়ে এসে রাসুল ﷺ এর হাটুতে হাটু লাগিয়ে বসে, তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আবার নিজেই তার উত্তর সঠিক হয়েছে কি না বলে গিয়েছিলেন, সেই অসম্ভব সুন্দর, ভীষণ শক্তিশালী পিলার গুলোর ওপর ইসলাম এখনো দাড়িয়ে আছে, বেহেস্তের বুকে।আমি দুঃখিত, কিন্ত দুনিয়ার মানুষকে আমার আজ একথা বলতেই হবে। যারা ইসলামকে দোষারোপ করছে, তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই, ইসলামের দোষ দিয়ো না। কেউ যদি ইসলামকে দোষী বলে, তাদের ওপর অভিশাপ নেমে আসবে। হ্যা, তোমরা দোষী করতে পারো, তাদেরকে, যারা ইসলামের নামে, মুসলিম সেজে বসে আছে। সত্যকার মুসলিম কোনদিনও কোন খারাপ কাজ করতে পারে না, কাউকে আঘাত করতে পারে না, কারোর ক্ষতি করতে পারে না, কাউকে হত্যা করতে পারে না। তারা ড্রাগন হতে পারে, কাকড়া হতে পারে, নেকড়ে হতে পারে, বন্য জীবজন্তু হতে পারে, মানুষের পিছে ধাওয়া করতে পারে, এমন বীভৎস ভাবে যে মানুষ উল্টা তাদের থেকে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তারা কখনোই মুসলিম হতে পারে না।ইসলাম, সে তো সব চাইতে পরিচ্ছন্ন, উজ্জ্বল, বেহেস্তি এক জিনিস। যে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো, আর যে ইসলামের নামে, নিজের মুসলিম নাম ধরে, ইসলামের ক্ষতি করে বেড়াচ্ছে, তাদের দুজনকেই শাস্তি দিতে হবে, ভয়ঙ্কর সেই শাস্তি। মৃত্যুদন্ড। তারা ইসলামের মানহানি করছে। আস্তাগফিরুল্লাহ। ইসলাম কল্পনার বাইরে বিশুদ্ধ।আল্লাহ্র রাসুল ﷺ নিজেই ইসলামের ভীষণ সুন্দর বর্ণনা দিয়ে গেছেন। ইসলাম, সে তো অসম্ভব সুন্দর একজন মানুষের মতন, যার জিহ্বা আর হাত থেকে এই দুনিয়ার সবমানুষ, এমনকি সব কিছুই নিরাপদ। তাদের জিহ্বা আর হাত দিয়ে অন্য কারোর কোন ক্ষতি কখনোই হতে পারে না। আর তারা কিনা বলে বেড়াচ্ছে, আমরা এসব অরাজকতা করছি ইসলামের নামে?আস্তাগফিরুল্লাহ। অসম্ভব। এদেরকে এই দুনিয়া থেকে অপসারন করতে হবে। এই দুনিয়া এখন এক বিরাট যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ্, কোন কারণ ছাড়া, কোন হিকমত ছাড়া কোন কিছু করেন না। এই যুদ্ধ যদি আজ না হয়, তো সেটা কালকে হবে। কাল না হলে পরশু, এই সপ্তাহে না হলে আগামী সপ্তাহে, এই মাসে না হলে আগামী মাসে। তার আর খুব বেশী বাকি নেই। দুনিয়া, তার অবস্থা এখন এমন যে, তার ইনফেকশন হয়ে গেছে, আর সেই ফোড়া পেকে সেখান থেকে পুঁজ ফেটে বেরিয়ে পড়বে, চারিদিকে। যতক্ষণ তা না হচ্ছে, এই দুনিয়ায় আর কারোর কোন বিশ্রাম আর স্বস্তি নাই।এই যুদ্ধের পরে সাইয়িদিনা মাহদি (আ) কে আসতেই হবে। প্রথমে তিনি আসবেন, তারপর দজ্জাল, আর তার পর যীশুখ্রিষ্ট, সাইয়িদিনা ইসা (আ)। তারা সারা দুনিয়াকে এইসব ড্রাগন আর কাকড়ার হাত থেকে পরিষ্কার করবেন। যারা কিনা বলে বেড়াচ্ছে যে, আমরা ইসলামের নামেই এই সমস্ত অরাজকতা করে বেড়াচ্ছি, তাদেরকে এই দুনিয়া থেকে অপসারিত করতেই হবে। এই দুনিয়ার কোন শক্তি নাই যে কিনা তাদেরকে সেই শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে।আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করুন আর তোমাদের সবাইকে আশীর্বাদ করুন, তার সবচাইতে প্রিয় ভৃত্য, সবচাইতে সম্মানিত রাসুল সাইয়িদিনা মুহাম্মাদ ﷺ এর সম্মানের উসিলায়।আল-ফাতিহা।وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ الله عَنهُمَا، عَنِ النَّبيّ ﷺ، قَالَ: «المُسْلِمُ منْ سَلِمَ المُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِআব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রকৃত মুসলিম সেই, যার জিভ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে। আর প্রকৃত মুহাজির (দ্বীনের খাতিরে স্বদেশ ত্যাগকারী) সেই, যে আল্লাহ যে সব কাজ করতে নিষেধ করেছেন, তা ত্যাগ করে।’’[বুখারি১০, ৬৪৮৪, মুসলিম ৪০, নাসায়ি ৪৯৯৬, আবু দাউদ ২৪৮১, আহমদ ৬৪৫১, ৬৪৭৮, ৬৭১৪, ৬৭৫৩, ৬৭৬৭, ৬৭৭৪, ৬৭৯৬, দারেমি ২৭১৬]